জাহিদ হাসান : একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যার ঘটনা যেন থামছেই না। এক বছরে প্রায় হত্যা করা হয়েছে ৪৮ জনকে। এসব ঘটনা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে না দেখে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। এছাড়া এসব ঘটনার সঠিক তদন্তের প্রয়োজনে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া যেতে পারে বলেও মনে করেন তারা। বুধবার এনটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে তারা এসব কথা বলেন।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, সাম্প্রতিক হত্যাকা-গুলো যারা ঘটাচ্ছে কেন তাদের সরকার চিহ্নিত করতে পারছে না? শুধু বললেই হবে যে আমরা দেখছি, আমরা সনাক্ত করছি এবং ডিএনএ টেস্ট করছি। জনগণের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত তাদেরকে সনাক্ত করে জনসম্মুখে আনা এবং জনগণের আস্থা ফেরানোর ব্যাপারে রাজনীতি করণ করলে চলবে না।
তিনি আরো বলেন, বর্হিবিশ্ব যখন দেখবে আমরা জঙ্গিদের ধরতে পারছি এবং শাস্তি দিতে পারছি, তখন আমাদের দক্ষতা বাড়বে। এছাড়া সাইবার ইনফরমেশন ডিজিটাল যেটি বিস্তৃত আকারে বিরাজ করছে সেটির ব্যাপারে আমরা এখনও ততটা যোগ্য নই। তাই আমেরিকা, কোরিয়া যদি আমাদের টেকনিক্যালভাবে সাহায্য করতে চায় তাহলে আমাদের উচিত তাদের সাহায্য গ্রহণ করা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এটিকে রাজনৈতিক বক্তব্য এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং এটি একটি হুমকি সেটি অস্বীকার করারও সুযোগ নেই। জঙ্গিহামলা এখন থেকে যদি দমন না করা হয়, তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্রের উপরে চেপে বসবে।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, এঘটনার সাথে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি যুক্ত। অভ্যন্তরীণ সমাধান হলো মূল সমাধান। সেখানে যদি আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এবং এর উৎস খুঁজে বের করতে পারি, তাহলে বর্হিবিশ্বের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ থাকে না।
কখনও ঢাকা, কখনও রাজশাহী, কখনও ঝিনাইদহ কখনও বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকায় একই কায়দায় খুন হচ্ছেন একের পর একজন। তাদের কেউ শিক্ষক, কেউ ধর্মীয় নেতা, কেউ ব্লগার, কেউ বিদেশী নাগরিক। ঘটনার কয়েকঘণ্টা পরই সেই খুনের দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠীরা বিবৃতি দিচ্ছে আমেরিকা থেকে পরিচালিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এভাবেই গেল দেড় বছরে হত্যা করা হয়েছে প্রায় অর্ধশত মানুষকে। দেশের ভেতরে একের পর এক হত্যাকা-ের দায় স্বীকার সরকার আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী এড়াতে পারে না বলে মনে করেন এই দুই বিশ্লেষক।
এছাড়া একের পর এর হত্যারকা-ের পর নিজেদের উদ্বেগের কথা নানানভাবে জানিয়েছেন বিশ্বের কয়েকটি সংস্থা। তাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে তাদের সেই উদ্বেগ যেমন কাটবে, তেমনি নিজেদের সক্ষমতা জানান দেওয়া যাবে বলেও মনে করেন তারা।