সাজ্জাদুল হক : বান্দরবানের গহীন লোকালয়ে মৌসুমি খাদ্য সংকটের সময় বরাদ্দ করা চাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। এবারের গ্রীষ্মের শুরুতে থানচি ও বড়মদকের কয়েকটি গ্রামের মানুষ বনের আলু খেয়ে বেচে আছে বলে গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
পরবর্তিতে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে পাঠানো চালের খুব অল্পই দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে বলে জানিয়েছেন ঐসব গ্রামের মানুষ।
পাহাড়ের পড়ন্ত বিকেলে খাবারের আয়োজন নিয়ে বসেছে একটি পরিবার। খাবারের তালিকায় কিছু শামুক আর কলার মোচার সাথে খুবই সামান্য একটুখানি মাছ। দিন ও রাত মিলিয়ে এই খাবারটাই তাদের একমাত্র আহার।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, তিন মাস ধরে আমরা শুধু সামান্য কটা ভাত খাচ্ছি। আর মাঝে মাঝে বনের আলু খেয়ে জীবন কাটাচ্ছি।
বড়মদকের পাড়ার প্রধান বলেন, কেওয়াই মং মার্মার মত গরিব মানুষের খাবারের কষ্ট পাহাড়ে নতুন কিছু না। কেওয়াই মং মার্মা একজন বয়স্ক বুড়ো। তিনি খুব অসুস্থ্য। এই অসুস্থ্য বুড়োটা খেতেও পারে না।
তবুও কেওয়াই মং-এর ছবির কল্যাণে পাহাড়ে চাল এসছে। বরাদ্দ হয়েছে শতাধিক ম্যাট্রিক টন চাল। সেই সঙ্গে উঠেছে চাল লুটপাটের অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, আমার বরাদ্দ ছিলো ৪৫ জন ২০ কেজি হারে। কিন্তু ঐ ৪৫ জনের খাদ্যকে দিতে হয়েছে ১শ’ জনের মধ্যে। এখানে লুটপাটের কি হলো।
শঙ্খনদী বেয়ে আরেকটু এগিয়ে গেলে চোখে পড়ে আরেকটি গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দাদের কেউই চালের কোন বরাদ্দই পাননি।
ঐ গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, পাবে পাবে বলে আসছে, কিন্তু এখনো কোন চাল আমাদের চোখে পড়েনি আর পাওয়ার কোন উপায়ও দেখছি না।
রেমাক্রি বাজারে দেখা মেলে এক বৃদ্ধার। ২০ কেজি চালের পরিবর্তে ১০ কেজি চাল পাবার অভিযোগ করতেই তাকে রক্তচক্ষু দেখালেন রেমাক্রির ইউপি মেম্বার। ভোটের মৌসুমে সরকারি চাল এলেই ভোট মেলে আবার পেটও ভরে। পাহাড়ের মানুষ বলছে, খাদ্য সংকট তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার যে নিয়মিত প্রকল্প তা থেকেও বঞ্চিত পাহাড়ের মানুষ। একাত্তর টিভি