ওমর শাহ : রমজান মাস। রহমতম, বরকত, নাজাতের মাস। এ মাসের পূর্ণাঙ্গ হক আদায় করা প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য। তাই রোজাকে বিশুদ্ধভাবে পালনের জন্য রয়েছে কিছু বিধি বিধান। আমাদের সময় ডটকম পাঠকদের জন্য এসব বিধি বিধান জানাতে থাকছে পবিত্র রমজানের ধারাবাহিক আয়োজন ‘রোজার জানা অজানা’। আজ থাকছে ইফতার প্রসঙ্গ।
ইফতার করার মুস্তাহাব নিয়ম
সূর্যাস্তের পর ইফতারে বিলম্ব করা অনুচিত। কিন্তু আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে সাবধানতার জন্য কিছু সময় বিলম্ব করা উত্তম।
দুই. খেজুর কিংবা খোরমা দ্বারা ইফতার করা সুন্নত। তা না হলে অন্য কোনে মিষ্টিদ্রব্য বা শুধু পানি দ্বারা ইফতার করবে।
তিন. আগুনে পাকানো খাদ্য, রুটি, ভাত, শিরনি ইত্যাদি দ্বারা ইফতার করা দোষণীয় নয়। কিন্তু ফল দ্বারা ইফতার করাই উত্তম।
চার. ইফতার করার আগে এই দোয়া পড়বেন :‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু’ ‘হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোজা রেখেছি, তোমারই প্রদত্ত রিজিক দ্বারা ইফতার করছি।
সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করা
দেরি না করে সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে আছে, যতদিন মানুষ দেরি না করে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে। সহীহ বুখারী ১/২৬৩
সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করে ফেললে
সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল এখনো সূর্যাস্ত হয়নি। এমন অবস্থায় রোজা কি ভেঙে যাবে? ভেঙে গেলে একটি রোজা কাজা করাই কি যথেষ্ট হবে, নাকি কাফফারাও দিতে হবে?
এ ক্ষেত্রে রোজা ভেঙে যাবে। এ ধরনের ক্ষেত্রে হুকুম হলো, ভুল সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকবে এবং পরবর্তী সময়ে একটি রোজা কাজা করে নেবে। তবে কাফফারা আদায় করতে হবে না। হজরত হানজালা (রা.) বলেন, ‘আমি রমজান মাসে হজরত উমর (রা.)-এর দরবারে উপস্থিত ছিলাম। সেখানে কিছু পানীয় পেশ করা হলো এবং কেউ কেউ সূর্য ডুবে গেছে মনে করে তা পান করল। তখন মুয়াজ্জিন উচ্চৈঃস্বরে বললেন, আমিরুল মুমিনিন! আল্লাহর কসম, সূর্য এখনো ডোবেনি, তা উদিত অবস্থায় আছে। তখন হজরত উমর (রা.) বললেন, যারা ইফতার করে ফেলেছে, তারা যেন তার পরিবর্তে আরেকটি রোজা রাখে। আর যারা ইফতার করেনি, তারা যেন সূর্যাস্ত পর্যন্ত তা পূর্ণ করে।’
[মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা ৬/১৫০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৩৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ৩৬৯; ফাতহুল কাদীর ২/২৯০]
খেজুর দ্বারা ইফতার করা
খেজুর দ্বারা ইফতার করা মুস্তাহাব। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার শুরু করবে। আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যার কাছে খেজুর আছে সে খেজুর দ্বারা ইফতার করবে। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কেননা পানি হল পবিত্র।’ সুনানে তিরমিযী হাদীস : ৬৯০ আরো দেখুন : মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭৫৮৬