ডেস্ক রিপোর্ট:: সেই বির্তকিত ওসি আব্দুল হাই এবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রির নির্দেশে ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর বহু বির্তকিত ওসি আব্দুল হাইকে স্টেন্ডরিলিজ করা হয় গোয়াইনঘাট থানা থেকে । সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল হাইয়ের বিরোদ্ধে ছিলো অভিযোগের পাহাড়। তবুও অদৃশ কারিশমায় ওসি আব্দুল হাই ছিলেন বহাল তবিয়্যতে। গোয়াইনঘাট থানার শতাধিক নিরীহ জনগণের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আই.জি) কে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে গত ০৯/১০/১৫ইং নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ স্বম্বলীত আবেদনটির প্রেক্ষিতে পুলিশ হেড কোয়ার্টার গত ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর তাকে স্টেন্ডরিলিজ করে।
এই বির্তকিত ওসি কোম্পানীগঞ্জে যোগদানের পর থেকে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে করে পাথরখেকোদের চক্রের কবলে পড়ে শারপিন টিলা, ভোলাগঞ্জ রেলওয়ে রোপওয়ে বাংকার, কালাইরাগ গ্রাম, গুচ্ছগ্রাম, সাদা পাথর এলাকা, কালীবাড়ী গ্রাম এবং লিলাই বাজারের অস্তিত্ব বিলীন হতে যাচ্ছে।
জানাযায়, ওসি আব্দুল হাই কোম্পানীগঞ্জ থানায় যোগদানের পর থেকে বোমা মেশিন চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কমপক্ষে ৯০টি বোমা মেশিন সিন্ডিকেটের কাছ থেকে অগ্রীম হিসেবে ১ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এর বাইরে প্রতিদিন প্রায় ৩০০টি বোমা মেশিন চলে কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে। একেক এলাকার বোমা মেশিন সিন্ডিকেটদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৫-৬ লাখ টাকা করে ওসির চাঁদাবাজ বাহিনী আদায় করছে।
আক্রোশমুলক দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জের সুজন মিয়া। গতকাল দুপুরে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। আইনজীবির মাধ্যমে দেওয়া স্মারকলিপিতে সুজন মিয়া জানিয়েছেন- বিনা কারনে দীর্ঘ ১৮ দিন কারাভোগের পর তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদী হওয়ায় তাকে অন্য মামলায় আসামি করার পায়তাঁরা চলছে বলে দাবি করেন সুজন।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া মাঝপাড়া গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন- গত ২ আগষ্ট রাতে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ গুচ্ছ গ্রাম এলাকায় বোমা মেশিনের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্স অভিযান চালায়। ওই দিন রাতে তিনি নিজ বাড়িতে ঘুমে ছিলেন। পরে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাইয়ের নির্দেশে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশ। এ সময় থানায় এনে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। ঘুষ দিতে না পারায় তাকে গুচ্ছ গ্রামের অভিযানের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি করে কারান্তরীণ করা হয়।
পরে তার পরিবারের সদস্যরা এলাকাবাসীর সহায়তায় চাদা তুলে তাকে জামিন করালেও ওসি আব্দুল হাই গত জুন মাসে দায়ে করা অপর একটি মামলায় তাকে আসামি করে আদালতে আবেদন করলে তার জামিন হয়নি। পরবর্তীতে ঈদের দুই দিন আগে ২০ আগষ্ট তিনি আদালত থেকে ওই মামলায়ও জামিন পান। সুজন মিয়া দাবি করেন- ‘জীবনে আমি কখনো মামলার আসামি হইনি। কিংবা আমার পরিবারের কেউও মামলার আসামি হননি। আমরা নিরীহ শান্তিপ্রিয় লোক। কিন্তু কোম্পানীগঞ্জের ওসি আব্দুল হাই আমার উপর পরপর দুটি আক্রোশমুলক মামলা দিয়ে দীর্ঘ ১৮ দিন কারাগারে রেখেছেন। আমি তার কথা মতো ৫০ হাজার টাকা চাদা না দেওয়ার কারনে ওসি এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।’ স্মারকলিপিতে ওই দুটি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন সুজন মিয়া। একই সঙ্গে তাকে দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সিলেটের পুলিশ সুপার ছাড়াও স্বরাস্ট্রমন্ত্রী, সিলেট-৪ আসনে এমপি, আইজিপি, অতিরিক্ত আইজিপি, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, দুদক, ডিজিএফআই, এনএসআই, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী সহ সিলেট আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। আর স্মারকলিপি গ্রহন করে এ ব্যাপারে ওসিকে দ্রুত অন্যত্র বদলি করার অনুরোধ জানিয়েছেন সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা।